নব্বই-এর কোনো এক বিকেল। আমি বিমানের আভ্যান্তরীণ ফ্লাইটে উঠে বসেছি। আইলের পাশে সিট আমার। বিমান রানওয়ে ছেড়ে ওঠার পরে তখন ধূমপান করা যেত।
হঠাৎ দেখি পরিচিত মুখ ওপাশ থেকে হেঁটে আসছে। স্যান্ডেল পরা, ছেড়ে দেওয়া সাদা সার্ট, হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো। বিমানে সচারচর এরকম সাধারণ পোষাকে সেইসময়ে মানুষ চড়ত না। কিন্তু মানুষটা সাধারণ নন। হুমায়ূন ফরিদী।
আইলের ওধারে এসে সে বসল। একটা সিগারেট ধরালো। সহযাত্রী, তার পরিচিত, ধূমপান বিষয়ে কিছু বলল। “ডাক্তার বলেছে, সিগারেট না ছাড়লে বাঁচব না”, ফরিদী বললেন, “আমি বলেছি, সিগারেট ছাড়লে বেঁচে কী লাভ?”
কুড়ি বছর আগের ঘটনা। ফরিদীকে অবশেষে সিগারেট ছাড়তে হল। সেই সাথে বাঁচাটাও।
তাঁর মত অসাধারণ এদেশে বেঁচে থেকেই বা কী লাভ করত? হয় প্যাকেজ নাটক বানাও, সোপ অপেরা, নয়ত বিজ্ঞাপন বানাও। পেটে ক্ষুধা নিয়ে সংস্কৃতির গুষ্টি উদ্ধার কর, অথবা অপসংস্কৃতির দাসত্ব কর। ফরিদী শেষেরটা বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে হয়তো তিনি বেঁচে থাকার আনন্দটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন।
আমি অভিনয় বিশেষজ্ঞ নই। তবে ফরিদীকে কেন জানি আমার ডাস্টিন হফম্যানের মত মনে হয়। জায়গা মত জন্মালে নির্ঘাৎ এক জোড়া অস্কার জিতে নিতেন।
আল্লাহ তাঁর আত্মাকে শান্তি দিক।
সুন্দর।
ReplyDeleteছোটবেলায় তাকে বাংলা ছিনেমার ভিলেন হিসেবে জানতাম । তাকে অনেক খারাপ মনে হতো ।কারণ, আমাদের কে বুঝানো হতো যে ভিলেনরা সাধারনত ভালো হন না । কিন্তু বড় হয়ে জানলাম " He is our legend ". শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে ।
ReplyDelete